তাসকিন আর কী বলবেন, তিনিও তো প্লেয়ার


খেলাধুলা প্রতিবেদকঃ খেলাটা তো আর শুধুই একটা পেশা নয়, মানুষকে আনন্দ দেওয়া এবং নিজে আনন্দিত হওয়ার মতো এক কাজ। খেলায় হারলে খেলোয়াড়ের নিজের আনন্দটা আসবে না জানা কথা, তবে হারের জ্বালা থাকে বলেই জয়ের আনন্দটা হয় সীমাহীন। সঙ্গে ব্যক্তিগত অর্জন-ব্যর্থতার অনুভূতি মিলে এ বড়ই আবেগপ্রবণ এক পেশা। তাসকিন আহমেদের মতো কারও জন্য বুঝি এই পেশাই সেরা। শত সমস্যা আর কষ্টেও মুখ থেকে হাসি যায় না। দীর্ঘদেহী, সুদর্শন এক খেলোয়াড়। ক্রিকেটার না হলে দ্বিতীয় পেশা হিসেবে একজন মডেল হলেই হয়তো বেশি মানাত তাঁকে। সব মিলিয়ে মাঠের পারফরম্যান্স ঠিক থাকলে তাসকিন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা পোস্টারবয়, উইকেট পেয়ে তাঁর দুই হাতে ওড়ার ভঙ্গিতে ভর করে যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটও উড়তে থাকে।তাসকিন কাল রাতেও হাসছিলেন। এ রাতে অবশ্য তাঁর আনন্দিত হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। কাগজ-কলমে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী হয়েও তাসকিনের দল দুর্বার রাজশাহী বিপিএলে পঞ্চম জয় পেয়েছে। এর মধ্যে কাল রাতেরটিসহ পরপর দুটি আবার টুর্নামেন্ট সেরা রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। তিনি নিজে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেটের মালিক হয়ে গেছেন এ রাতেই।

 সদাহাস্যোজ্জ্বল তাসকিনের হাসি আরও বিস্তীর্ণ হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু তাসকিন এমন সব প্রশ্নেও হেসে হেসে উত্তর দিচ্ছিলেন, অন্য কেউ হলে হয়তো উত্তরই দিতেন না। অথবা প্রশ্ন শুনে লজ্জাবনত হতেন। আসলেই অবাক লাগে, এত বড় বড় দল থাকতে তাসকিনের মতো একজন ক্রিকেটার কিনা বিপিএলে খেলছেন দুর্বার রাজশাহীর মতো এক বিতর্কিত দলে। নাটকীয় জয়গুলোও যে দলটার নেতিবাচক চেহারা ঢাকতে পারছে না!তাসকিনের একটা বড় দুঃখ হওয়া উচিত বিপিএলে ভালো দল না পাওয়া। তিনি যে দলেই খেলেন, সেই দল নিয়েই হতে থাকে বিতর্ক। তাসকিনের ভাষায়ও এটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’, তবে তিনি উৎসাহ হারানোর মানুষ নন, ‘এটা কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক, এ নিয়ে চারটা মৌসুম…(ভালো দল পাননি) ড্রাফটে গেলাম, রাজশাহী আমাকে নিল। আমি নিজেকে নিজে অনুপ্রাণিত করতে থাকি। বড় দল যদি মনে করে আমি তাদের নেওয়ার মতো খেলোয়াড়, তাহলে নিশ্চয়ই নেবে।’

এবারের বিপিএলে রাজশাহী মানেই একের পর এক বিতর্ক। সর্বশেষ টাকা না পেয়ে কাল তাদের বিদেশি ক্রিকেটাররা মাঠেই আসেননি, ম্যাচের আগে বদলাতে হয়েছে হোটেল। তাসকিনের ভাষায়, পুরো দিনটাই ছিল একটা ‘ড্রামা’। সেই নাটকের কথা শুনুন তাঁর মুখ থেকেই, ‘আজ (কাল) দিনের শুরু থেকেই অনেক ড্রামা দেখেছি আমরা সব খেলোয়াড়। আমি যতটুকু শুনেছি, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে নাকি টাকা নিয়েও রুমে নক করেছে, কিন্তু বিদেশিদের কেউ দরজা খোলেনি।’‘ড্রামা’র বর্ণনা দিতে গিয়ে একটা নতুন অভিজ্ঞতার কথাও বলেছেন তাসকিন, ‘আমার জীবনেও নতুন অভিজ্ঞতা হলো…ম্যাচের দিন হোটেল বদলানো। আমাদের যেটা বলা হয়েছে, আমাদের রুম বুকিং দেওয়া ছিল শেরাটনে, পরে ওয়েস্টিনে ছিলাম। ওয়েস্টিনে নাকি সব রুম বুক হয়ে গেছে। সে জন্য হোটেল বদলালাম। বোর্ড থেকেও আমাদের ফোন দিয়ে বলল, “আসো, খেলো।” বিদেশিদের বলেছে, “পেমেন্ট সমস্যা নয়, তোমরা আসো।”’

আগের পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

نموذج الاتصال