মুঠো ফোনে প্রেমের সম্পর্ক, দেখা করতে গিয়ে বান্ধবীসহ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার

   


কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক যুবকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক তরুণী ও তাঁর বান্ধবী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার মধ্যরাতে নাঙ্গলকোট থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীদের একজন। এতে ওই যুবকসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
 এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ৯ জানুয়ারি দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের সেবাখোলা বাজারে খোকন মিয়ার করাতকলের দোকানঘরের ভেতরে ধর্ষণের ঘটনা  ঘটে। মামলার প্রধান আসামি শহীদুল ইসলাম উপজেলার নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা । এ ছাড়া করাতকলের মালিক খোকন মিয়াকে ২ নম্বর আসামি এবং মো. মহসিন নামের একজনকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মো. মহসিন বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে। তিনি বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের যুবদল নেতা হিসেবে পরিচিত। গতকাল ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে তিনি এলাকায় নেই। তাঁর মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রাতে নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহসিন নামের ওই ব্যক্তি যুবদলের রাজনীতি করেন বলে আমার জানা নেই। আমি এখন ঢাকায় আছি, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি এ ঘটনায় যুবদলের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত থাকেন, তাহলে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’


আজ মঙ্গলবার সকালে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার চার দিন পর গতকাল রাতে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি আগেই জানাজানি হওয়ায় আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাঁদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী পরস্পরের বান্ধবী। একজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর, আরেকজনের বাড়ি চাঁদপুর। কুমিল্লা নগরের টমছমব্রিজ এলাকার একটি মেসে তাঁরা ভাড়া থাকেন এবং গৃহকর্মীর কাজ করেন। নাঙ্গলকোটের নুরপুর গ্রামের শহীদুল ইসলামের সঙ্গে তাঁদের একজনের মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৯ জানুয়ারি তাঁরা শহীদুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। সাতজনের একটি দল তাঁদের দুজনকে তুলে নিয়ে সেবাখোলা বাজারে খোকন মিয়ার স মিলে নিয়ে যান। যুবদল নেতা মহসিনের নেতৃত্বে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দলবদ্ধভাবে তাঁদের ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে। বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর করাতকলের মালিক খোকন মিয়া এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মহসিনের বাবা রঞ্জু মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে যুবদলের রাজনীতি করে। এ জন্য একটি গ্রুপ আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার করা হয়েছিল। এখন মেয়ে দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’ ওসি এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘আমাদের কাছে অপরাধীর পরিচয় অপরাধী। থানায় মামলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’

আগের পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

نموذج الاتصال